আগামী .১২ জুলাই, বুধবার ঢাকায় সমাবেশ করে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দেবে বিএনপি। ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করেছে দলটি। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলোও একই দিন ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে সমাবেশ করে এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দেবে।
বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনের ভাসানী মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাংগঠনিক যৌথসভায় দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানও এ বিষয়ে কথা বলেছেন।
১২ জুলাই থেকে নতুন পর্যায়ের আন্দোলনের ঘোষণা আসছে বলে জানান আমানউল্লাহ। নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘১২ জুলাইয়ের সমাবেশে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে আপনাদের আসতে হবে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকতে হবে। সেখান থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নতুন পর্যায়ের আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের ঘোষণায় তাঁদের নতুন কর্মসূচিও থাকবে। তাঁরা এই সমাবেশের প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছেন।
সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে সমমনা কয়েকটি জোট ও দলের সঙ্গে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে গত ডিসেম্বর থেকে। অনেক দিন ধরে তাঁরা এক দফার আন্দোলনে যাওয়ার কথা বলে আসছিলেন।
বিএনপির নেতারা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের মাত্র ছয় মাস বাকি। এই অল্প সময়ের মধ্যে তাঁদের আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নেওয়ার তাগিদ থেকে এখন এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন তাঁরা।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান সভায় বলেন, এই সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন করতে চাচ্ছে। তেমন কোনো নির্বাচন এই দেশে হবে না। জনগণ সেই নির্বাচন করতে দেবে না।
সরকার পতনের দাবিতে শুধু দলের নয়, সাধারণ মানুষও মাঠে নেমে এসেছেন বলে দাবি করেন এই বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, ‘আগামী ১২ জুলাই থেকে আন্দোলনের কর্মসূচি সফল করার মাধ্যমে, নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার কায়েম করে এক দফা বাস্তবায়ন না করে ঘরে ফিরব না।’
সভায় বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে নেতা-কর্মীদের ১২ জুলাইয়ের কর্মসূচিতে আসার আহ্বান জানান। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সাত দিন কষ্ট করবেন, সারা জীবন ভালো থাকবেন। সেই প্রস্তুতি নেন। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে অবৈধ সরকারের পতন ঘটাব। গত ১৫ বছর অনেক কষ্ট করেছেন। এখন কিন্তু ফসল ঘরে তোলার সময়। সকল ইউনিট নিয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়ে উপস্থিত হতে হবে।’ সূত্র: প্রথম আলো
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদের কথায় এখন ঘোড়াও হাসে, সবাই হাসে। নতুন পন্থায় তারা বিএনপিকে নিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। তাদের কথার উত্তর দিতে চাই না।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় বুধবার (৯ জুন) দুপুরে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, তারা কী যে বলে নিজেরাও জানে না। তারা মিথ্যা বলে। অবলীলায় ঠান্ডা মাথায় হাছান মাহমুদরা বিএনপিকে নিয়ে মিথ্যা বলেন।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এমনি এমনি ক্ষমতায় কেউ এনে দেবে না। স্বৈরাচারী কায়দায় বর্তমান সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে আছে। নির্বাচনে তারা জয়ী হতে পারবে না জেনেই ক্ষমতাসীনরা নির্বাচন নির্বাচন খেলা করে নিজেরাই জয়ী হয়ে বসে আছে।
কঠোর লকডাউনের ৭ম দিনে সরকারি নির্দেশনা ও বিধি-নিষেধ অনুযায়ী জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওযার কারণে রাজধানীতে ১১০২ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
এছাড়াও ২৪৫ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১ লাখ ৭১ হাজার ৯৮০ টাকা জরিমানা করেছে। অন্যদিকে ৮০৪টি গাড়িকে জরিমানা করা হয় ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা।
বুধবার কঠোর লকডাউনের সপ্তম দিনে রাজধানীতে ডিএমপির ৮টি বিভাগের পক্ষ থেকে অভিযানের মাধ্যমে এই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বুধবার বিকালে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, লকডাউনের সপ্তম দিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডিএমপির ৮টি বিভাগের রমনা, লালবাগ, মতিঝিল, ওয়ারী, তেজগাঁও, মিরপুর, গুলশান ও উত্তরা এলাকায় সরকারি নিয়ম অমান্য করে বাইরে বের হওয়ার কারণে ১ হাজার ১শ ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২৪৫ জনকে ১ লাখ ৭১ হাজার ৯৮০ টাকা জরিমানা করেছে।
এছাড়া ট্রাফিক বিভাগ ৮০৪টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলায় জরিমানা আদায় করেছে ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫শ টাকা।